DEHLIJ

সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়

 কদমবুশির নিচে বেহস্ত রাখিনি


১.
বলগুলি রুপালী ছিলো। উঠছিলো,  যেন উড়ছিলো। বলের ডানা থাকে না। মানুষবাচ্চা তাকে ওড়ায়। অন্যমনস্কের পকেট থেকে খুচরো ঝরে গেছে। খসে যাওয়া চামড়া নাম দিই তাকে। নাম, আমি যা দেবো তাই। হাড়ের মালা আদিম বিভূতিভূষণ। যে যে অব্দি হাত যাচ্ছেনা, সেখানে চোখ তো যেতেই পারে। চোখ বলে দিক, পাথর না শ্যাওলা। সেভাবে নাম দেবো। এইই বিজ্ঞান।
  প্রজাপতির দিকে তাকাতে একবার মন টেনেছিলো বটে, কিন্তু উপস্থিতে হাত না তুললে যদি ক্লাস না? লাটিম বলছি, হাট্টিম বলছি, মজঝিম বলছি। বিদ্যুৎ মনে হয় এটাই।

২.
চিহ্ন সহজব্যাপী। যদিও তন্তুময় কারুকার্যরা স্বতন্ত্র এককে দাঁড়িয়েছিলো। চিহ্নের ছাপ পড়ে পড়ে পথ গেছে। নির্দ্বিধা তাকে ধরে নিক। কাঁধের পাশে আঁচড়দাগ যে আচরণ, তার ধূম্রজাল বেলার পারে। ফলকথা চিহ্ন নির্দেশক। সমস্ত পথে তার সাকিন ছড়ানো। স্থির হওয়া যেতো, সে-ই তো বিন্দুঘনত্বে আদি। কমোড ডাক দেয়। ডাক দেয় অন্ধকারা। চিহ্ন মেপে নিয়ে হিয়েরোগ্লিফিক দেওয়াল আবগারী আদায় হয়ে ওঠে...

৩.
বাউল খুব মিহি কথা। চিৎকার থেকে লোভ হয় মাত্র। চিৎকার খুব চড়া। জলের নিম্নে গতি। ধোঁয়ার উর্ধ্বে। ফোটাতে জানলে জলের উর্ধ্বগতি বানানো যায়। তাতে কি এসে যায়। চিৎকার বাদে বাউলে কি আছে, ভাবতে গিয়ে দেখি, তুমি ছিলোনা। হ্যাঁ, শব্দটা 'ছিলোনা'। নতজানু হয়ে লাভ নেই বলছিনা, তবে কদমবুশির নিচে বেহস্ত রাখিনি। পেরেক যে দেয়ালে গাঁথা, তুমি তার উল্টো দেয়ালে হাতুড়ি ঠুকছো। ওতে জল পড়ে না, চুনসুরকি ঝরে। মেঘ তো সহজ, চাইলেই রেশন করা যায়। খানায় পড়লে খোঁড়া বলে লোকে, সেটাকে কুসংস্কার বলে জেনেছিলাম। বাঁশি আরেক সহজ। সে ইচ্ছেমতো বাজতে বাজতে ফেড হতেই পারে।


নীল, হে হাস্য, রম-ধাতু বেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কাল। দেখতে চাও? বেশ। শুরু করো অলিন্দ থেকে লাজাঞ্জলি ছুঁড়তে গিয়ে যখন পায়ে বিঁধে গেল খুলে পড়া ঘুঙুর। নিচে বাবরি। অপসৃয়মান। উত্তাপসুবাস উঠে আসবার আগেই সংজ্ঞা হারিয়ে গেছিলো। আরো আগে? যেখানে কোঁচবকদুটি এক তীরে শাশ্বত হলো। জলের কাছে কোথাও, কবি থমকে আছিল। নাকি আরো? ধরো বগল অব্দি চুড়ি দিলে। ফের পায়ে মোটা হাঁসুলী আর কোমরে হাত। এবার পুরোহিত। এবার পশুদল। এখানে প্রাথমিক দ্বিধা। স্বরে যে আদর, আর মাংসে যে আসর। লহমা পেরিয়ে গেল, তুমি সিদ্ধান্তে পড়লে? না? তাহলে একটা হার্ডল উল্টে গেল।
এরপর ধরতে বলার গাইড নেই। নিজের মনমতো ধরো। শুধু কয়েকটি সূত্র রেখে দিই। মাটি ভিজবে বলে। পাখা পড়বে বলে। দাঁড়া নড়বে বলে। পকেট খেয়াল করো নরম। এতদ্ব্যতীত অর্জন নেই।

৫.
অপচয় এক নিখাদ দোস্তি ছিলো। একে উদ্দাম কয়। ঘটনা যে কোনো হয়, পারম্পর্য হয়, প্রকারান্তর হয়, বহুধাবিপুল হয়, এ সবই খুচরো। কালা ধন তিজোরিপ্রবণ। পোঁতা রইলো। যক্ষ আগুলাক। ক্যাশলেস সমকাল, অ্যাপে অর্ডার করছে মেঘ, জল, প্রণাম, দিনান্ত ও খুচরোসংগম। এই পার থেকে একটা বাচ্চামতো খাদ। ওপার কদ্দুর কে জানে, কারণ মাঝে কুয়াশা।
 সেই জল, যে কিনা ইত্যাদি, এখন কুয়াশা হয়ে পর্দা মেরেছে। যাও, তাকে ছেঁড়ো -


1 comment:

FACEBOOK COMMENT