DEHLIJ

বিদ্যুৎ পাল

মধুচাঁদ

 


আমাদের মধুচাঁদ সেই সমুদ্রশহরের এক ভুল জায়গায় আমাদের নামিয়ে দিয়েছিল।

বাসটা চলে যাওয়ার পর, ঘুমচোখে টের পেয়েছিলাম – এখানে তো নামার ছিল না।

খুঁজতে খুঁজতে, পয়সায় কুলোয় তেমন এক হোটেল, ব্রীজের নিচে বাজার-চত্বরে পেলাম।

অনেক বছর পর ঠিক তেমনই বাজার-চত্বর ‘নুক্কড়’ সিরিয়ালে (হোটেলও ছিল নিশ্চয়ই) দেখেছিলাম।

সে যে কী দোতলা হোটেলবাড়ি, খুপরি-খুপরি ঘর, খাট বলতে প্রায় বেঞ্চি!

এক ঘরে আমরা তো পাশের ঘরে দেওরের সাথে বাচ্চাকোলে পালানো বৌ।

তার পরের ঘরে দুই মাঝবয়সী পুরুষ আর এক মহিলার আনন্দ-গুলজার।

জানতাম না রাতে ঘরের জানলা খোলা রাখলে পিছনের বস্তি থেকে পড়বে ঢিল আর সকালে ম্যানেজারের কাছে হবে নালিশ – ‘রাতভর উদোম বেলেল্লাপনা, বলি আমাদের বাড়িতে বৌবাচ্চা আছে কি নেই?’

 

ম্যানেজারের ঘর থেকে কান গরম করে বেরিয়ে ওপরে উঠে দেখি তোমার চান হয়ে গেছে, আর অবাক কান্ড, তুমি খোলা চুলে ওই পাশের ঘরের বৌটির সাথেই গল্প করছ – একসাথে একটা ছবি তুলে দিতে বললে। বললে নিচে উঠোনে তোমার ভেজা কাপড় মেলা হয়ে গেছে আর বাগানটা ঘুরে ঘুরে দেখেছ। “কী সুন্দর জায়গাটা!” বলে বারান্দার জানলায় হাসলে।

 

এখন ভাবি, ভুল জায়গায় না নামলে কি জানতাম, তোমার মনের এই ব্যাপ্তি?


No comments

FACEBOOK COMMENT